ওজোন ক্ষয়ের প্রভাব [Effects of Ozone Depletion]

 ওজোন ক্ষয়ের প্রভাব [Effects of Ozone Depletion]

1. মানুষের ওপর প্রভাব: 

অতিবেগুনি রশ্মিতে মানুষের শরীরে নানা রকম ক্ষতি হয়, যেমন- ত্বকে ক্যানসার, ত্বকের তামাটে বর্ণ ধারণ বা সৌর দগ্ধ (Sun burn) হওয়া, চোখে ছানি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার হ্রাস, জন্ডিস, লিউকোমিয়া বা রক্তের ক্যানসার, বন্ধ্যাত্ব বৃদ্ধি ও প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস প্রভৃতি হতে পারে।

2. প্রাণীর ওপর প্রভাব: 

ওজোন ক্ষয় নিয়ন্ত্রণ করা না হলে প্রাণীজগতেও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে, যেমন-  প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস, উভচর প্রাণীর সংখ্যা হ্রাস, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, মাছ ও পাখির ডিমের ক্ষতিসাধন প্রভৃতি।

3. উদ্ভিদের ওপর প্রভাব: 

উদ্ভিদজগতের ওপরও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষ করা যায়। যেমন-  সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত, পাতায় ক্লোরোফিলের পরিমাণ হ্রাস, পত্ররন্ধ্রের মাধ্যমে বাষ্পীভবন বৃদ্ধি, সমুদ্রে ফাইটো-প্ল্যাঙ্কটনের বিনাশ এবং তার পরিণামে সামুদ্রিক খাদ্যশৃঙ্খলে বিপর্যয় ঘটতে পারে।

4. জলবায়ুর ওপর প্রভাব: 

ওজোন স্তর ক্ষয়ের জন্য সূর্যরশ্মির মাধ্যমে অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি ভূপৃষ্ঠে এসে পড়লে তার প্রভাবে ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডল উভয়েরই উয়তা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে যেমন বিশ্ব উয়ায়ন (global warming) প্রক্রিয়া আরও বেশি সক্রিয় হবে, তেমনি বায়ুর উষ্ণতা, বায়ুপ্রবাহের দিক ও গতি, বৃষ্টিপাত, ঝড়ঝঞ্ঝা, ঘূর্ণবাত, প্রভৃতির পরিবর্তন ঘটবে। আর আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের এইসব পরিবর্তন কালক্রমে জলবায়ুরও পরিবর্তন (climate change) ঘটাবে।

5. বাস্তুতন্ত্রের ওপর প্রভাব: 

অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে জীবপরিবেশ ও জীবজগৎ বিপন্ন হলে তার ওপর ভিত্তি করে গড়ে-ওঠা বাস্তুতন্ত্রেরও স্বাভাবিকভাবে সংকটের সৃষ্টি হবে। খাদ্যশৃঙ্খল বিঘ্নিত হবে। নানা ধরনের জীবজন্তু ও উদ্ভিদের বিলুপ্তি ঘটবে। জীবজগতের শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলি ও প্রাকৃতিক বাসস্থানে পরিবর্তন দেখা দেবে।
Next Post
No Comment
Add Comment
comment url